মহারাষ্ট্রে আসন নিয়ে জট কাটল বিজেপির

Entry Thumbnail
ছবি : releated
Sujata Adhikari

বিধানসভা ভোট এখনও ঘোষণা হয়নি। কিন্তু বিজেপি মহারাষ্ট্রে তাদের জোট ‘মহাজুটি’র দুই শরিক, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা এবং উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের এনসিপির সঙ্গে আসন রফার ছক তৈরি করে ফেলেছে বলে শাসকজোট সূত্রের খবর। প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি করা হয়েছে, রফাসূত্র অনুযায়ী সে রাজ্যের ২৮৮টি আসনের মধ্যে বিজেপি ১৫০-১৫৫টি, শিন্ডেসেনা ৯০-৯৫টি এনসিপি (অজিত) ৪০-৪৫টিতে লড়বে।গত কয়েক মাস ধরে জল্পনা ছিল, বিধানসভা ভোটে শাসকজোটে ভাঙন ধরতে পারে। লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে খারাপ ফলের পরে বিজেপি অজিতকে নিয়ে উৎসাহী নয় বলেও জল্পনা ছিল। এ বারের লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে এনডিএ পেয়েছে ১৭টি আসন। বিজেপি সাতটি, দুই শরিক শিবসেনা (শিন্ডে) এবং এনসিপির অজিত গোষ্ঠী যথাক্রমে জিতেছে ন’টি ও একটি আসন। পাঁচ বছর আগের ফল থেকে প্রায় দু’ডজন আসন কম পেয়েছে এনডিএ জোট। ভোটের ফল প্রকাশের পরেই আরএসএসের মুখপত্রে প্রকাশিত নিবন্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল, অহেতুক রাজনীতির ঘুঁটি সাজাতে গিয়ে দল ভাঙানো মহারাষ্ট্রে বিজেপির ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হয়েছে।সে রাজ্যে বিজেপি-শিবসেনা সরকারের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এনসিপি-তে ভাঙন ধরানো হয়েছিল। অজিত তাঁরা কাকা তথা এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা শরদ পওয়ারের সঙ্গ ছেড়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ককে নিয়ে এনডিএতে যোগ দেন। সঙ্ঘের অভিযোগ, অজিতের এনডিএতে অন্তর্ভুক্তির ফলে বিজেপির পুরনো কর্মীরা মনঃক্ষুণ্ণ হন। কারণ, তাঁরা বরাবরই কংগ্রেসের ভাবধারার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এসেছেন। (কংগ্রেসি ভাবধারার নেতা) অজিতের এনডিএতে যোগদানে ‘ব্র্যান্ড বিজেপি’ বাজারদরও নেমে যায়। তা ছাড়া, ভোটের আগে এনডিএতে যোগ দেওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে যে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, সে কথাও লেখা হয় সঙ্ঘের মুখপত্রে।এর পরেই দু’দলের টানাপড়েন শুরু হয়েছে। বস্তুত শাসকজোটের অন্তর্কলহের কারণেই গত দেড় দশকের প্রথা ভেঙে এ বার হরিয়ানার সঙ্গে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটের আয়োজন করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। জল্পনা তৈরি হয়, ‘মহাজুটি’তে ভাঙন আসন্ন। বিজেপি-শিন্ডেসেনার সঙ্গে ঠাঁই হবে না অজিতের। সম্প্রতি নায়ায়ণগাঁওয়ে অজিতের ‘জন সম্মান যাত্রা’র সময় কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। এই তিক্ততার মধ্যেই ছত্রপতি শিবাজির মূর্তি ভেঙে পড়ার ঘটনা নিয়ে বিজেপি-এনসিপি (অজিত) টানাপড়েন শুরু হয়েছিল। এমনকি, মধ্যপ্রদেশের ‘লাডলি বহেনা’ প্রকল্পের আদলে মহারাষ্ট্রে শুরু হওয়া ‘লড়কি বহিন যোজনা’-র কৃতিত্ব নিয়ে প্রকাশ্যে তরজা হয় বিজেপি-শিন্ডেসেনার।মহারাষ্ট্র বিধানসভায় মোট বিধায়কের সংখ্যা ২৮৮। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদু সংখ্যা ১৪৫। বিজেপির ১০‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌৩ এবং শিন্ডেসেনার ৩৮ জন বিধায়ক রয়েছেন। পাশাপাশি, বহুজন বিকাশ আঘাড়ীর ৩, প্রহার জনশক্তি পার্টির ২ এবং মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা, রাষ্ট্রীয় সমাজ পক্ষ, জেএসএসের এক জন করে বিধায়ক এবং ১৪ নির্দলের সমর্থনও রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সরকারের পাশে। এই পরিস্থিতিতে অজিতের ৪০ জন বিধায়ককে বাদ দিলেও গরিষ্ঠতা হারাতেন না মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে। দলের একাংশের যুক্তি ছিল, অজিতের পরিবর্তে রাজ ঠাকরের ‘মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা’ (এমএনএস)-কে জোটে নিলে ভাল ফল হবে বিধানসভা ভোটে। কিন্তু সম্ভবত সে ঝুঁকি নিচ্ছে না বিজেপি।

0 Comments

Leave a Comment