মিমের জবাব রিলে দিলেন রচনা। —
দ্যা সোশ্যাল বাংলা , ডিজিটাল ডেস্ক : এত দিন যে ধোঁয়া দেখলেই নাকে, মুখে রুমাল চাপা দিতেন, লোকসভা ভোট-তিথিতে রাতারাতি সেই কালো ধোঁয়াই কুলীন গোত্রে উঠে পড়েছে। হুগলি লোকসভায় কার্যত ভোটের ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে এই ধোঁয়া। সৌজন্যে, ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের কলকারখানার কথা বলতে গিয়ে রচনার মুখে উঠে এসেছিল, কালো ধোঁয়ার প্রসঙ্গ। তা নিয়ে মিম তৈরি হয় বিস্তর। এ বার সেই ‘মিমে’র জবাব ‘রিলে’ দিলেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’। পাল্টা ধেয়ে গেল সমালোচনাও।গত ১৬ মার্চ সিঙ্গুরে প্রচার করতে বেরিয়েছিলেন রচনা। সেখানে তাঁকে হুগলির বন্ধ কারখানা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি যখন এলাম, তখন তো দেখলাম অনেক কারখানা হয়েছে। চিমনি থেকে শুধু ধোঁয়াই ধোঁয়া। অন্ধকার রাস্তাঘাট। শুধু ধোঁয়াই বেরোচ্ছে। এত কারখানা হয়েছে। তা হলে কী করে বলছেন যে, কারখানা হয়নি? কারখানা তো হচ্ছে।’’ এই মন্তব্যের পরেই সমাজমাধ্যমে একাধিক মজার ‘মিম’ ছড়িয়ে পড়ে। কটাক্ষ ধেয়ে আসে তাঁর ‘ধোঁয়া ধোঁয়া’ মন্তব্য ঘিরে। এ বার মিমের জবাব রিলে দিলেন রচনা। ইদের দিন সকালে প্রচারে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতেই একটি রিল তৈরি করে ফেলেন রচনা। সেখানে বাসন্তী রঙের পোশাক পরিহিত ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর পিছনে দেখা যাচ্ছে একটি কারখানার চিমনি থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। হলদে ফ্রেমের বাহারি চশমা পরে সে দিকেই আঙুল তুলে দেখাচ্ছেন রচনা আর বলছেন, ‘‘আমাদের হুগলির ধোঁয়া। যে ধোঁয়া আমি সব সময় যাতায়াতের সময় দেখি। এটা কিন্তু সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়া নয়, এটা হল মেশিনের ধোঁয়া!’’
রিলের সমালোচনা করেছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তথা এককালে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রচনার সতীর্থ বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। লোকাল ট্রেনে প্রচার সেরে নামতেই লকেটকে প্রশ্ন করা হয় রচনার রিল নিয়ে। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ জানেন, কোনও কিছুই হয়নি। সিঙ্গুরের কৃষক কাঁদছেন, বুলডোজ়ার দিয়ে টাটাকে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডানলপকে শেষ করে দিয়েছে। ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। সেখানে সব যন্ত্র চুরি করেছে। সিগারেটের না কি চিমনির— কিসের ধোঁয়া বলতে পারব না। আমি তো কোনও উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি না। কোনও বড় শিল্প কি এসেছে? কোনও শিল্প কি হয়েছে?’’ এর পরেই লকেট দাবি করেন যে টাটা সংস্থা নাকি প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছে যে, বিজেপি সরকার তৈরি হলেই শিল্প গড়তে বাংলায় পা রাখবে তারা। হুগলির বিদায়ী সাংসদ বলেন, ‘‘টাটা মোদীজিকে আশ্বস্ত করেছেন, যে দিন আপনাদের সরকার আসবে, সে দিন আমরা শিল্প করব।’’ প্রাক্তন সতীর্থকে পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেননি রচনা। তিনি বলেন, ‘‘আমার রাস্তায় যাওয়ার সময় ধোঁয়া দেখতে পেয়েছিলাম। সেটাই বলেছিলাম। এ বার কী বলবেন? সবাই বলেছিলেন যে, ওটা নাকি বিড়ির ধোঁয়া ছিল। ওটা বিড়ির ধোঁয়া না কারখানায় লাগানো চিমনির ধোঁয়া, সেটা আপনারা বিচার করুন। প্রতি মুহূর্তে আপনারা বুঝতে পারবেন, আমি কিছুই ভুল বলিনি। ৪ জুনের পর আরও আরও ধোঁয়া দেখবেন।’’
‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর দাবি, রাজ্যে শিল্প আছে। কিন্তু বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের জন্য আরও শিল্প দরকার। রচনার মতে, দিদি থাকলেই একমাত্র বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফুটে উঠবে। তার পর নিজের কথা বলতে গিয়ে তারকা প্রার্থী বলেন, ‘‘দিদির সঙ্গে থাকলে আমি নিশ্চয়ই পারব। এ জন্যই দিদি আমাকে নিয়ে এসেছেন।’’
0 Comments
Leave a Comment