ফাইল চিত্র
ভারতের মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ কীভাবে ঋণের ফাঁদে আটকে পড়ছে, আরবিআইয়ের বার্ষিক রিপোর্টে তার একটা ছবি উঠে এল ২০২০-২১ অর্থবর্ষে দেশে পারিবারিক সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল ২৩ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ সালে সেটাই কমে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাত্ তিন বছরে ভারতবাসীর মোট সঞ্চয় কমেছে প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা। লক্ষ্য করে দেখুন, তিন বছরে যে পরিমাণ সঞ্চয় কমেছে, সেটা দেশের মোট সঞ্চয়ের সমান। অন্যভাবে বলতে গেলে ভারতে পরিবারপিছু অর্ধেকের বেশি সঞ্চয় কমেছে। তাও মাত্র তিন বছরে। অন্যদিকে গরিব মানুষ ও মধ্যবিত্তদের উপর ঋণের বোঝা বেড়েই চলেছে। ২০১৮-১৯ সালে ভারতে পরিবারগুলির উপর ৭ লক্ষ ৭০ হাজার কোটির ঋণ ছিল। ২০২৩-২৪ সালে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমবেশি ১৬ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাত্ একদিকে যেমন সঞ্চয় তলানিতে ঠেকছে, তেমনই পরিবারপিছু ঋণের বোঝা দ্বিগুণ হয়েছে। আপনাদের একটা সহজ হিসাব দিচ্ছি। মধ্যবিত্ত ভারতীয় পরিবার ২০১৭-১৮ সালে ঋণের কিস্তি বাবদ গড়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ করতো। গত অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমবেশি ১২ হাজার টাকা। মধ্যবিত্ত বলতে আমি সেইসব পরিবারের কথা বলা বলছি। যাদের আয় বছরে ৬ লক্ষ টাকা বা তার নীচে। আর তারাই জেনে বা না জেনে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছেন। টিভি, ফ্রিজ থেকে গাড়ি, বাড়ি এমনকি মোবাইলেও ইএমআই। ইএমআই দিতে দিতেই রোজগারের বেশিরভাগটা খরচ হয়ে যাচ্ছে। কত খরচ? হিসাব করতে বসলে দেখব, গড়ে বেতনের ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ টাকা ইএমআই দিতেই বেরিয়ে যাচ্ছে। বিশেষত ফ্ল্যাটের ইএমআই। সঙ্গে ক্রেডিট কার্ড, পার্সোনাল লোন ও আরও অনেক কিছু। ভারতের মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ কীভাবে ঋণের ফাঁদে আটকে পড়ছে, আরবিআইয়ের বার্ষিক রিপোর্টে তার একটা ছবি উঠে এল। আর সেই ছবিটা যথেষ্টই আশঙ্কার। সেটাই আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। আসলে মূল্যবৃদ্ধির চাপ, সংসারের বিপুল খরচের চাপেই হয়তো আমরা অনেকগুলো লোন একসঙ্গে নিতে বাধ্য হচ্ছি। আরবিআইয়ের পরামর্শ, দ্বিতীয় কোনও লোন নেওয়ার আগে দুবার ভাবা উচিত। কোনওভাবেই যেন রোজগারের ৫০ শতাংশের বেশি ইএমআই মেটাতে বেরিয়ে না যায়। এটা নিশ্চিত করতে পারলে সংসারের উপর খুব একটা চাপ পড়বে না।
0 Comments
Leave a Comment