ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে দেওয়াটা ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও জানে বলে প্রকাশ্যেই ডাক্তার আক্রমনের প্রতিবাদে নেমে একথা বলেন ঊনকোটি জেলার কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা। উল্লেখ্য, কৈলাসহরের ভগবান নগর এলাকায় অবস্থিত ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার আক্রান্তের প্রতিবাদে জেলার সমস্ত সরকারি ডাক্তারদের প্রতিকী আন্দোলন হিসেবে ঊনকোটি জেলা জুড়ে দুইদিন প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ থাকার পর এবার মাঠে নামলো স্বাস্থ্য কর্মীরা। এগারো ডিসেম্বর বুধবার ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মীরা হাসপাতালের সম্মুখে এক প্রতিকী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষোভ প্রদর্শন চলাকালীন স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান, যে হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার আক্রান্ত হয়, সেই হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা কি নিরাপদ? এই প্রশ্ন তোলে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিকী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। উনারা এও জানান যে, গত ৫ডিসেম্বর রাতে ঊনকোটি জেলা পরিসদের প্রাক্তন সহকারী সভাধিপতি তথা বর্তমান ঊনকোটি জেলা পরিসদের বিজেপি দলের নির্বাচিত সদস্য শ্যামল দাস সহ মোট তিনজন জেলা হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ধ্রুপদ দাসের সাথে অশ্লীল আচরণ করে, এমনকি চিকিৎসকের গালে চড়ও দেয়। পরবর্তী সময়ে আক্রান্ত চিকিৎসকের পক্ষ থেকে কৈলাসহর থানায় মামলা করা হলে পুলিশ মামলাটি রেজিষ্ট্রি করে তদন্তে নেমে ছয় ডিসেম্বর দুপুরে শ্যামল দাস সহ মোট তিনজনকেই পুলিশ আটক করে আদালতে প্রেরণ করে দিয়েছিলো। পরবর্তী সময়ে ছয় ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আদালত থেকে আক্রমণ কারী তিনজনই জামিনে মুক্তি পেয়ে যায়। আদালত থেকে আক্রমণ কারীরা জামিনে মুক্ত হওয়ায় সাত ডিসেম্বর ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের সমস্ত চিকিৎসকরা ঊনকোটি জেলা পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করে কৈলাসহর থানার পুলিশের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে যে, পুলিশের দুর্বল ফরোয়ার্ডিং-এর জন্যই আক্রমণ কারীরা জামিন পেয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে পুলিশের দুর্বল ফরোয়ার্ডিং-এর প্রতিবাদে জেলার সমস্ত সরকারি চিকিৎসকরা নয় এবং দশ ডিসেম্বর দুইদিন ঊনকোটি জেলার সমস্ত প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রেখে প্রাথমিকভাবে প্রতিকী বিক্ষোভ দেখিয়েছিলো। জেলা জুড়ে চিকিৎসকদের দুদিনের প্রতিকী আন্দোলনের শেষ হতেই এগারো ডিসেম্বর বুধবার ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও প্রতিকী আন্দোলনে নেমে পড়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, আক্রমণ কারী উনি যত বড় মানুষই হোন না কেন, উনি ডাক্তার আক্রমণ করে উনার সুনাম বৃদ্ধি করেছেন নাকি জেলার নাম উজ্জ্বল করেছেন? ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের সন্তান সন্ততী পরিবার ফেলে রেখে সাধারণ মানুষেরই পরিসেবা প্রদান করে থাকেন। এমতাবস্থায় যদি ডাক্তার সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হয় তাহলে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা মনে রাখা উচিত, ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও মানুষ। ইট দিয়ে যদি ঢিল ছোড়া হয় তাহলে, ইটের বদলে পাটকেল দিয়ে জবাব দিতে জানে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রতিকী বিক্ষোভ আন্দোলনে স্বাস্থ্যকর্মীদের এমন কথায় অনেকেই বলছেন যে, ঊনকোটি জেলায় ডাক্তার আক্রমণ নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন অনুস্টিত হবে।
ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে দেওয়াটা ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও জানে
Bikash Deb
0 Comments
Leave a Comment